বৌদ্ধ তন্ত্র বিষয়ক বুলশিট

বন্ধুগন আজকাল দেখেছি যে ইউ টিউবে বহু বাংলা অডিও স্টোরি ভিত্তিক চ্যানেল গড়ে উঠেছে এবং বৌদ্ধ তন্ত্র নিয়ে নানা রকমের লেখা চলছে। সাহিত্যে নানারকম ওয়েভ আসে নিয়ে সন্দেহ নেই। ব্রাম স্টোকারের কাউন্ট ড্রাকুলা "ভ্যাম্পায়ার" কন্সেপ্ট টাকে পপুলারাইজ করেছিল যার আগমন হয়েছিল "কার্মিলা" উপন্যাস দ্বারা।।

আমার বক্তব্য এখানেই যে

১। বিশুদ্ধ বৌদ্ধ ধর্মে তন্ত্রের স্থান নেই। ত্রিপিটকে যেমন নেই তেমনি সর্বস্তিবাদ, বৈভাষিক, মাধ্যমিক ও শূন্যবাদ (নাগার্জুন এর) এই মূল চার দর্শনেও নেই। শাক্য মুনির ধর্মে তন্ত্রের অস্তিত্ব নেই একদমই। তন্ত্র বৌদ্ধ ধর্মে একটি করাপশন মাত্র, যেটা কিছুটা সাইনো টিবেটান ও বঙ্গীয় রীতিতে এসেছে।

২। বৌদ্ধ দর্শন আমাদের দেশের একটি গর্বের বিষয়। ভারতীয় নাস্তিক দর্শন গুলির পুরোধা হলো বৌদ্ধ দর্শন। তাই একে ভূতের গল্পের মশলা হিসেবে ব্যবহার করা ভারতীয় ঐতিহ্যের অপমান। সংবিধান এ উল্লেখিত অন্যতম মৌলিক কর্তব্য আমাদের দেশের ঐতিহ্যের সম্মান করা।

৩। অতিরিক্ত আলোচনা হচ্ছে তন্ত্র ও নানারকম জাদুটোনা নিয়ে। তন্ত্রের ইতিহাস কে অসম্মান না করেই বলছি এটা রাজ্যের শিক্ষার্থী দের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে।

৪। পডকাস্ট গুলোতেও এই একই জিনিস চলছে। এটা আটকানো দরকার। বৈজ্ঞানিক চেতনা বৃদ্ধিও আমাদের সংবিধানে উল্লেখিত মৌলিক কর্তব্য। আলোচনা হোক পরিবেশ নিয়ে, মোকম্পিটিটিভ প্রোগ্রামিং, AI ML, ডিপ লার্নিং, নিউরাল নেটওয়ার্কস, ব্লকচেইন, ডেটা সায়েন্স, কোয়ান্টাম ফিজিক্স এর মত বিষয় নিয়ে। একটা ইন্টিগ্রেশন বি প্রতিযোগিতা হোক! নাহলে বাংলায় আরেকটা সত্যেন্দ্রনাথ বসু বা প্রশান্ত চন্দ্র মহালনবীশ কী করে হবে?

এডিট

আমার এই পোস্ট টির নীচে জনৈক ভদ্রজন লিখেছেন যে কে কী লিখবে তার স্বাধীনতা এই দেশে আছে। অবশ্যই আছে। আমার পোস্টে আমি একবারও বলিনি যে তন্ত্র বিষয়ক হরর গল্প যারা লেখেন তাদের লেখা আইনগত ভাবে ব্যান/ নিষিদ্ধ করা হোক। আমার চিন্তাটা সমাজে ক্রমবর্ধমান কুসংস্কার নিয়ে। যেভাবে বাংলায় এই বিষয় গুলি নিয়ে আলোচনা বেড়েই চলেছে সেটা একটা ভয়ানক অবক্ষয় ডেকে আনবে। আজও আমরা নানজয়গায় জাদুটনা করতে গিয়ে শিশু বলির মতো ঘটনা দেখছি, কাজেই বিজ্ঞান চেতনা বেড়ে উঠুক সেটাই কাম্য।

জয় হিন্দ, বন্দেমাতরম।